youtube

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায় | স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়

আজকাল আমাদের সকল স্টুডেন্টদের মধ্যে একটা হতাশা কাজ করে কিভাবে নিজের মেধাশক্তিকে বৃদ্ধি করবো।কিভাবে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াবো। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য নানারকম কৌশল খুঁজে থাকেন। যদি আপনিও এমন হয়ে থাকেন তবে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায়

আজকে আমরা আলোচনা করবো স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির অলৌকিক শক্তি নিয়ে। ইনশাআল্লাহ তুমিও প্রখর মেধাবী হয়ে উঠবে।শুধু প্রয়োজন ক্ষুদ্র প্রচেষ্ঠার।

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায়

ইখলাস বা আন্তরিকতা

তুমি কি সফলতা লাভ করতে চাঅ? যেকোনো কাজের সফলতা অর্জনের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে ইখলাস বা আন্তরিকতা। সেটা স্মৃতিশক্তি বাড়ানো হোক কিংবা অন্য যে কোন কাজেই হোক। আর ইখলাস তথা আন্তরিকতার মূল উপাদান তথা ভিত্তি হচ্ছে বিশুদ্ধ নিয়্যাত। হাদিস শরীফে আছে "প্রত্যেক কাজই নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল।" অথ্যাৎ আমরা যে কাজই করই না কেনো তার পূর্বে বিশুদ্ধ নিয়্যাত বাধ্যতামূলক।আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেন ইসলামের কল্যাণের জন্য।

দুআ ও জিকির করা

তুমি কোন কাজে প্রকৃত সফলতা লাভ করতে চাও? তাহলে রবকে বেশি বেশি স্মরণ করো।তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো। তাঁর নামের যিকির করো। আল্লাহর রহমত ছাড়া তুমি কোন কাজেই সফলতা লাভ করতে পারবে না।

বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা কোরআনে ইরশাদ করেছেন, "তোমরা আমাকে ডাকো আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিবো।"

আল্লাহ তাআলার কাছে সার্বক্ষনিক দোয়া করো।

এক্ষেত্রে এ দোয়াটি করতে পারেন,

_رب زدني علما

"হে প্রভু আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দিন। "

চেষ্টা করো বিভিন্ন উপায়ে

একটু গভীর ভাবে মনোযোগ দাও। এরপর কোন কোন বিষয় আপনার সমস্যা হচ্ছে এগুলো আগে খুঁজে বের করো। জেনে রাখা উচিত সকলের মুখস্থ করার ক্ষমতা এক রকম নয়। কেউ খুব দ্রুত মুখস্থ করতে পারে আবার দীর্ঘ সময় ধরে মনেও রাখতে পারে। তুমিও পারবে একটু কৌশল অবলম্বন করো। দেখবে অনেকে উচ্চস্বরে পড়তে পছন্দ করে, অনেক নীরবে পড়তে ভালোবাসে।অনেকে হেঁটে হেঁটে পড়তে, অনেকে আবার টেবিলে বসা ছাড়া পড়তেই পারে না। কেউ আবার সকালে ভালো মুখস্থ করতে পারে। আবার কেউ শেষ রাতে পড়তে ভালোবাসে। এক কথায় তুমি যে সময়ে পড়তে আরাম অনুভব করো সেই সময়ে পড়তে বসো। বারবার পড় এবং সাথে সাথে লিখে ফেল। রুটিন তৈরি করো সেই অনুযায়ী নিয়মিত পড়াশোনা শুরু করো। ইনশাআল্লাহ তোমার মেধাশক্তি আস্তে আস্তে বাড়বে।

স্থির করো কতটুকু মনে রাখবে

আপনি কি দীর্ঘ সময় ধরে পড়া মনে রাখতে চান? তাহলে স্থির করো তুমি কতটুকু মনে রাখতে চাও।আমরা জীবনে ভালো-খারাপ অনেক বিষয়ই একসাথে মনে রাখতে চায়।ফলে দেখা যাচ্ছে এ ব্যাপারগুলো কিছুই আমাদের মাথায় থাকছে না।এ বিষয় গুলো মস্তিষ্ক একসাথে ধরে রাখতে পারে না।তাই স্থির করো কতটুকু তুমি মনে রাখবে।

পাপ থেকে দূরে থাকো

মেধাশক্তি কিংবা স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়ার পিছনে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে পাপ কাজ। মনে রাখবে পাপ আমাদের স্মৃতিশক্তিকে দুর্বল করে দেয়।পাপের অন্ধকার ও জ্ঞানের আলো কখনো একসাথে থাকতে পারে না। একবার মালিক ইবনে আনাসকে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করলোব,"স্মৃতিশক্তিকে কিভাবে শক্তিশালী করা যায়ন?" জবাবে ইবনে আনাস বলেছিলেন - যদি কোনো কিছু স্মৃতিকে শক্তিশালী করতে পারে তা হলো পাপ কাজ ছেড়ে দেওয়া।তাই যথাসম্ভব চেষ্টা করো পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার।

পরিমিত বিশ্রাম

পরিমিত বিশ্রাম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির অন্যতম হাতিয়ার।সারাদিন আমরা যা কিছু করে থাকি যখন আমরা ঘুমোতে যায় তখন মস্তিষ্ক সারাদিনের তথ্যগুলো প্রক্রিয়াজাত করে।অনেকে মনে করে যারা বেশি পড়শোনা করে তাদের কম ঘুমালে চলে।এটা আসলে সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বরং তাদের আরো বেশি ঘুমের দরকার। বিজ্ঞান বলছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ৬-৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন।সাথে সাথে দুপুরের খাবারের পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়া যেতে পারে যা তোমাদের মন মেজাজকে চাঙা রাখবে।

নিয়মিত ব্যায়াম করা

ব্যায়াম শুধু মানুষের শরীরকেই সচল রাখে না বরং এটি মস্তিষ্কেও সচল রাখে।নিয়মিত ব্যায়াম না করলে কিংবা শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলো সচল না থাকলে রক্ত বাহী নালীগুলোয় চর্বি জমে। ফলে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল হয় না।মস্তিষ্কে রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহে বাধাপ্রাপ্ত হয়।যার কারণে ক্ষতি গ্রস্ত হতে পারে মস্তিষ্কের অন্যান্য কোষগুলো।তাই সুস্থ থাকতে চাইলে নিয়মিত ব্যায়াম করতেই হবে।

পুনরাবৃত্তি করা

যা কিছু মুখস্থ করো তা বারবার কাউকে শোনাতে পারো। অথবা অন্য কাউকে শেখাতে পারলে আরো বেশি ভালো হয়। অন্তত সপ্তাহে একবার হলেও তুমি যা শিখেছো তা পুনরায় রিভিশন দেয়ার চেষ্টা করো।এতে করে তোমার পড়াটা আরো বেশি মস্তিষ্ক জোড়ালো ভাবে ধারণ করবে। এটা ছাড়াও নিজে নিজেই পড়াটা আবৃত্তি করতে পারো।হাটতে হাটতে স্মরণ করতে পারো।

টানা দীর্ঘ সময় ধরে পড়া পরিহার করো। প্রতি ঘন্টায় অন্তত ১০-১৫ মিনিট বিরতি নিতে পারো।এতে করে মস্তিষ্ক কিছুক্ষণ বিশ্রামের সুযোগ পাবে এবং পরবর্তী পাড়াগুলো দ্রুত মস্তিষ্ক গ্রহণ করবে। আর একদম হতাশ হওয়া চলবে না।ইনশাআল্লাহ এভাবে চেষ্টা করতে থাকো তুমিও প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী হবে।

সোস্যাল মিডিয়া এড়িয়ে চলা

বর্তমান স্টুডেন্টদের পড়াশোনায় মনোযোগ বিঘ্ন অটনার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো সোস্যাল মিডিয়া। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে সোস্যাল মিডিয়ায় ঘোরাঘুরি বন্ধ করো। সোস্যাল মিডিয়ায় আমরা নিজেদের যে পরিমাণ ব্যস্ত রাখি এতে করে পরবর্তী কোন কাজেই মন বসাতে পারি না। 

১০ মিনিট সোস্যাল মিডিয়ায় থাকবো বলে প্রবেশ করি অথচ ঘন্টার পর ঘন্টা চলে যায় আর ফেরা হয় না।সোস্যাল মিডিয়ায় বেশি ব্যস্ত থাকলে মুভি,গান-বাজনা,গ্যামিং ইত্যাদিতে আমরা আসক্ত হয়ে পড়বো।ফলে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া কিংবা মুখস্থ করা এসব আর ভালো লাগবে না।তাই চেষ্টা করো যথাসম্ভব সোস্যাল মিডিয়া পরিহার করার।

বিষয়গুলো লিখে ফেলা

তুমি যা শিখো সাথে সাথে লিখে ফেলার অভ্যাস করো। এর একটা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। লেখার সময় মস্তিষ্কে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তপ্রবাহের পরিমান বাড়ে।তাই লিখে রাখো ডায়রিতে,ই-মেইলে বা ব্যক্তিগত কোন ব্লগে।

মানসিক ভাবে চাপমুক্ত থাকো

মানসিক ভাবে একবারে চাপ নিয়ো না। কেননা মানসিক চাপের ফলে মস্তিষ্কের নিউরন গুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে আমরা আর স্বাভাবিক ভাবে কোন কিছু করতে পারি না। তাই যথাসম্ভব চেষ্টা করো নিজেকে মানসিক ভাবে চাপমুক্ত রাখতে।

শেষ কথা

আজকে আমরা যে বিষয় গুলো তোমাদের সাথে শেয়ার করেছি আজ থেকে কাজে লাগাতে শুরু করো। ইনশাআল্লাহ আমাদের বিশ্বাস তুমিও প্রখর মেধাবী হয়ে উঠবে। তোমার স্মৃতিশক্তি ইনশাআল্লাহ বাড়বে। আশা করছি আল্লাহর রহমতে আজকের আর্টিকেলটি তোমরা বুঝতে সক্ষম হয়েছো।

ভালো থেকো তোমরা

পরবর্তী কোন এক আর্টিকেলে আবার দেখা হচ্ছে।

ফি-আমানিল্লাহ্।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.